বেশ ক’মাস
ধরেই ফেসবুকে একখানা নতুন ফ্রেন্ড চলছে- ‘গট
জ্যাবড্’। ব্যাপারখানা
তেমন কিছুই নয়, লোকে যাচ্ছে, গিয়ে
কোরোনা রোগের ভ্যাকসিন নিচ্ছে, নেবার সময় একখানা ফটো
তুলছে, বাড়ি এসে সগৌরবে তা ফেসবুকে পোস্টাচ্ছে, সাথে
লিখে দিচ্ছে- ‘গট জ্যাবড্’, অর্থাৎ কিনা (ডিকশনারিয়ান অর্থে) ‘খোঁচা
খেলুম’। এখন
মজাটা হচ্ছে সারাটা জীবন ধরে নানা সময়ে, নানা
ভাবে, নানা জায়গা থেকে, নানা রকমের খোঁচা আমরা
খেয়েই থাকি; কিন্তু কখনও তা উজবুকের মত ফেসবুকে দিই না, বরং
সুন্দর সুন্দর, দন্ত বিকশিত করার মত সিচুয়েশানই মোরা ফেসবুকে
পোস্টানোর জন্য প্রেফার করি। কিন্তু এই পেত্থমবার দেখছি যে খোঁচা খেয়েও লোকে দাঁত
কেলিয়ে সেলফিদান করছে। কিন্তু কেন? এযাবৎ
এ নিয়ে তিনটি তত্ত্ব আমার মাথায় আসছে, গান
গেয়ে জানাতে চাইলে এভাবে জানানো যায়-
গট জ্যাবড্ এর তিন কারণ
-এক, দুই, তিন,
এ খোঁচা খেলে কোরোনা সারে
-এক নম্বর, এক নম্বর,
খোঁচা দিতে ললনা থাকে
-দুই নম্বর, দুই নম্বর,
ফেসবুকে না দিলে কোরোনা
নাকি সারিবেনা
-তিন নম্বর, তিন নম্বর।
আজ্ঞে হ্যাঁ
মশাই, ঠিকই বুঝেছেন- প্রথমত, এ
খোঁচা যে সে খোঁচা নয়, এ হল গিয়ে অ্যান্টি-কোরোনা খোঁচা; নইলে
টীকা তো আমরা কতই না নিই, সবসময় তো আর টীকান্বিত অবস্থায় ছবি দিই না! আরে
বাবা, লোককে জানাতে হবে না যে ভ্যাকসিন নিয়াছি, এখন
আমার বিপদ হইতে ছুটি, ছুটি, ছুটি...ইয়াহু!
দ্বিতীয় কারণ হলেন যারা টীকা দিয়ে থাকেন তারা (এই থিওরিখানি অবিশ্যি মহিলাদের
বেলায় খাটে না)। এখন অবধি সব জায়গাতেই দেখা যায় (এমনকি আমার বেলাতেও তা ঘটেছে
মশাই) যে সবাইকে ভ্যাকসিন দিচ্ছেন সব সুন্দরী-সুন্দরী নার্স দিদিমনিরা; তা
তাদের সাথে একখানি ছবি তুলে ফেসবুকে দেবার লোভ কে ছাড়তে চাইবে বলুন? বিশ্বাস
হচ্ছে না? আরে মশাই আমার ভ্যাকসিন নেওয়ার দিন আমি নিজে দুজনের ছবি তুলে
দিয়েছি, এবং তাদের সলজ্জ আবদার ছিল নার্স দিদিমণিদের যেন ফোটোতে দেখা যায়।
এবারে আসি তিন নম্বর থিওরিতে, ফেসবুকে একখানা মিম
হামেশাই দেখা যাচ্ছে- ‘ভ্যাকসিন নিয়ে ফটো না দিলে ভ্যাকসিন কাজ করবে না’। বোঝাই যায় যে এটা একটা
খিল্লি ওড়ানো মিম, কিন্তু আসল মজাখানা হচ্ছে যে যারা এই ইয়ার্কিটা
পোস্ট করছেন একটু ঘাঁটলে দেখা যাবে তারা নিজেরাও নিজেদের ভ্যাকসিন নেওয়ার ফটো
ফেসবুকে পোস্টিয়েছেন। তবে আর কি, বুঝে নিন, আর
চলতে থাকুক- গট জ্যাবড্।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন