অ্যানশিয়েন্ট
অ্যাস্ট্রোনট থিয়োরি নিয়ে কথা বলতে গেলে যে নামটা সবচেয়ে বেশি শোনা যায় তা হল
এরিখ্ ভন্ দানিকেন। দানিকেন একজন সুইস্ লেখক যিনি এই কন্সপিরেসি থিয়োরির ওপরে
বেশ ক'খানা বই লিখেছেন। মানবজাতির উপরে ভিনগ্রহীদের প্রভাব নিয়ে তার লেখা
প্রথম বই ছিল- CHARIOT OF THE GODS। আজ
আমি এই লেখায় নিজস্ব কোনও মতামত প্রকাশ করব না, দানিকেন
এর CHARIOT OF THE GODS থেকে
আমার অত্যন্ত প্রিয় একটি অধ্যায় When our spaceship landed on Earth এর বঙ্গানুবাদ
করব।
ꖓꖡꗠꗬ যখন আমাদের মহাকাশযান অবতরণ করলো পৃথিবীতে ꗬꗠꖡꖓ
জুলস্
ভার্নে, যিনি কল্পবিজ্ঞানের জনক বলে পরিচিত, তাঁর লেখা গল্পগুলো আর গল্পে সীমাবদ্ধ নেই; আজ আমাদের মহাকাশচারীরা ৮৬ মিনিটেই পৃথিবীর চারদিকে ঘুরে আসতে পারেন, ৮০ দিনও লাগে না। আজ আমি মহাকাশযানের একটি কাল্পনিক যাত্রার বর্ণনা
দেব। কাল্পনিক বলছি বটে, তবে কয়েক দশক পরে এমন
যাত্রা হয়ত সত্যিই সম্ভব হয়ে উঠবে। মনে করা যাক মহাকাশযানটি পৃথিবী ছেড়ে ১৫০
আলোকবর্ষ দূরের কোন এক সূর্যের দিকে যাত্রা করবে।
মহাকাশযানটি
হবে আজকের সুবিশাল কোন জাহাজের মত বড় যার ওজন হবে প্রায় ১০০০০০ টন (অর্থাৎ প্রায়
৯০৭১৮৫০০ কেজি) যাতে জ্বালানিই থাকবে ৯৯৮০০ টন।
অসম্ভব
মনে হচ্ছে?
আজ
আমরা ছোট ছোট টুকরো মহাকাশে নিয়ে তা জুড়ে একটা আস্ত মহাকাশযান তৈরি করে ফেলতে
পারি। কয়েক দশক পরে হয়ত তারও দরকার পড়বে না, এমন বিশাল এক রকেট খুব সহজেই পৃথিবী থেকে লঞ্চ করে দেওয়া যাবে। তাছাড়া ভবিষ্যতে রকেট নিশ্চয়ই পারমাণবিক
জ্বালানী দ্বারা চালিত হবে এবং প্রায় আলোর গতিতে ছুটতে পারবে।
তো
আমাদের রকেটটি তার নির্ধারিত গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা হল। এটা কল্পনা করাটা বড়ই
মজাদার যে মহাকাশযানের সদস্যরা সময় কাটাবার জন্য কি কি করে থাকতে পারেন, কারণ আইনস্টাইনের থিয়োরি অফ রিলেটিভিটি মেনে চললে আলোর গতির কাছাকাছি
চলতে থাকার কারণে মহাকাশচারীদের জন্য সময় বেশ অনেকটাই আসতে এগোবে। মনে করা যাক
আমাদের মহাকাশচারীরা তাদের যাত্রায় ১০ বছর অতিবাহিত করে ফেলেছেন, কিন্তু পৃথিবীতে এর মধ্যে ১০৮ বছর কেটে গিয়েছে।
যখন
মহাকাশযান তাদের কাঙ্ক্ষিত তারার কাছে পৌঁছোল, তখন মহাকাশচারীরা নানারকম যন্ত্রের সাহায্যে সেই তারার গ্রহগুলিকে
নিরীক্ষণ করলেন, তার মধ্যাকর্ষণ মাপলেন, কক্ষপথ গণনা করলেন এবং আরো নানারকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেন; অবশেষে তারা একটি গ্রহকে অবতরণের জন্য বেছে নিলেন যার আবহাওয়া
পৃথিবীর সবচাইতে কাছাকাছি। আমাদের মহাকাশযানটি যদি, মনে করা যাক, ৮০ আলোকবর্ষ যাত্রা করে
থাকে তবে খুব স্বাভাবিকভাবেই তার সমস্ত জ্বালানি পুড়িয়ে গিয়েছে, মহাকাশচারীরা চাইবেন সেই গ্রহ থেকে তাদের ব্যবহারযোগ্য কোনও জ্বালানি
সংগ্রহ করে তাদের ট্যাঙ্ক আবার পরিপূর্ণ করে নিতে।
মনে
করা যাক সেই গ্রহটি প্রায় পৃথিবীর মতোই, আমি
আগেই বলেছি এমনটা একদমই অসম্ভব নয়, তাহলে
এমনটা হতেই পারে যে আমাদের পৃথিবী আজ থেকে আট হাজার বছর আগে যেমন অবস্থায় ছিল সেই
গ্রহটি আজ সে অবস্থাতে আছে; অবশ্যই
আমাদের মহাকাশচারীরা অবতরণের আগেই সে সব ব্যাপারে তাদের যন্ত্র দ্বারা খোঁজখবর করে
নিয়েছেন। তারা এমন একটি জায়গা বেছে অবতরণ করেছেন যার খুব কাছেই জ্বালানির (মনে
করা যাক ইউরেনিয়ামের) একটি ভান্ডার আছে।
প্ল্যানমাফিক
অবতরণ করার পর আমাদের মহাকাশচারীরা দেখলেন সেই গ্রহের অধিবাসীরা পাথর দিয়ে অস্ত্র
বানাচ্ছে, তা দিয়ে খাদ্যের জন্য পশু শিকার করছে, তাদের বাসস্থানের কাছে ভেড়া ও ছাগলের দল ঘুরে বেড়াচ্ছে, আদিম কুমারেরা মাটি দিয়ে গৃহস্থালী উপযোগী বাসন-কোসন তৈরি করছে।
আমাদের মহাকাশচারীরা তা দেখে বড়ই অবাক হলেন।
কিন্তু
সেই গ্রহের আদিম প্রাণীরা এর ব্যাপারে কি ভাবছে, এবং এই ঘটনাটাকে কি মনে করছে? এটা ভুলে গেলে চলবে না যে আট হাজার বছর আগে আমরাও কিন্তু এমন বর্বরই
ছিলাম, এটা আশ্চর্যজনক নয় যে তারা সবাই অবনমিত হয়ে
মাটিতে মিশে গিয়েছে এবং চোখ তুলে তাকাতে সাহসই পাচ্ছে না। এতদিন ধরে তারা সবাই
সূর্য এবং চাঁদকে পুজো করে এসেছে; কিন্তু
আজ যে এক অভাবনীয় ঘটনা ঘটেছে- স্বয়ং ঈশ্বরেরা স্বর্গ থেকে নেমে এসেছেন!
কোনও
নিরাপদ দূরত্ব থেকে লুকিয়ে সেই গ্রহের অধিবাসীরা আমাদের মহাকাশচারীদের দেখতে লাগল
যারা অদ্ভুতরকমের পোশাক পরেছিলেন ও তাদের মাথা থেকে দণ্ড বেরিয়েছিল (স্পেসসুট ও
হেলমেট যাতে অ্যান্টেনা লাগানো); তারা
অবাক হয়ে গেল যখন রাতকে দিনের মতো উজ্জ্বল করে দেওয়া হল (সার্চলাইট); আতঙ্কে তাদের দম বন্ধ হয়ে গেল যখন সেই আগন্তুকেরা আকাশে উড়ে
বেড়ালেন (রকেট বেল্ট); তারা আবার মাথা মাটিতে
লুকিয়ে ফেলল যখন অদ্ভুত অজানা কিছু “প্রানী” গর্জন করতে করতে আকাশে উড়তে লাগল, চলতে লাগল (হেলিকপ্টার, ড্রোন, অল পারপাস ভেহিকেলস্); এবং
পরিশেষে যখন পাহাড় পর্বত থেকে ভয়ঙ্কর সব দুম্দাম্, গুম্গুম্ শব্দ ভেসে আসলো, তারা সকলে ছুটে গিয়ে তাদের গুহায় লুকিয়ে পরল (পরীক্ষামূলক
বিস্ফোরণ)। এতে কোনও সন্দেহই নেই যে সেই আদিম অধিবাসীদের কাছে আমাদের মহাকাশচারীরা
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর বই কিছু নন।
(চলবে)
পরের ভাগটি পড়বার জন্য এখানে ক্লিক করুন => আমাদেরমহাকাশযান অবতরণ করল ভিনগ্রহে ২
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন