রবিবার, ১ মার্চ, ২০২০

স্বপ্ন উড়ান

স্বপ্ন ছিল-
দু ডানা ছড়িয়ে নীল আকাশের
মাঝে যাব উড়ে-
বাস্তবে গেল আধেক উড়ানে
আমার যে ডানা ভেঙে
ভাবনা ছিল বাতাসের কাঁধে
নীল রঙা ওই ঘুড়ির মত
যাব আমি ভেসে-
আসলে যা হল-
কালো রঙা ওই কালবোশেখির
ঝরে গর্জনে, কড়াল বাদলে
কাগজই গেল ছিঁড়ে
আমি হু-হু করে তাই পড়ে যাই হায়,
নাই কোনও ভর শরীরেতে নাই,
আসছে জমিন খুব গতিতে যে-
নাই নাই কোনও সাহায্য নাই,
করে বোজা চোখ পড়ি আমি হায়
মরণের অতলেতে

স্বপ্ন উড়ান

আমি লক্ষ্য করে দেখেছি যে যখনই আমি লেখালিখি বা আঁকাআকি করতে বসি, মৃত্যু এবং মৃত্যু সম্পর্কিত বিষয়গুলি আমার বেশ পছন্দের। প্রথম প্রথম মনে করতুম যে আমি মানুষটা বুঝি একটু পেসিমিস্টিক, কিন্তু পরে ভেবে দেখেছি যে না, আশা তো আমার কোনও ব্যাপারে কম নয়, বরং নিরাশই আমি বেশ কম হই। তবে এমনটা কেন হয় যে মৃত্যু নিয়ে লিখতে অথবা ভাবতে এত পছন্দ করি? এর উত্তর আমার একেবারেই জানা নেই।

তা কিছুদিন আগে পুরোনো খাতাপত্তর ঘাঁটতে ঘাঁটতে উপরের কবিতাখানা খুঁজে পেলুম (যদি অবিশ্যি ওকে কবিতা বলা যায়!)। তো ভাবলুম পেয়েছি যখন দিই ব্লগিয়ে; কারণ কবিতা তো আর সাধারণত লিখিনে, লিখি তো গান। তা শুধু কবিতাখানা দিলে তো পোস্টটা খুবই ছোট হয়ে যাবে; অগত্যা পোস্টের মাপ (মান নয় কিন্তু, সাবধান!) বাড়াতে আমার এই কলম ধরা।

যাই হোক, প্রথম পাঠে আমার মনে হয়েছে যে যদিও ব্যাপারটা কবিতা, তবে ইনিশিয়ালি আমি হয়ত গান হিশেবেই শুরু করেছিলুম। তার কারণ প্রথম ছটা লাইনে বেশ একটা মিউজিকাল এফেক্ট রয়েছে যা শেষের দিকে আর পাওয়া যায় না। লেখার বিষয় যদিও আবার সেই ‘মরণের অতলেতে’; এবং লেখাখানাকে একেবারেই আশাবাদী বলা যায় না- ‘আধেক উড়ানে’ ‘ডানা ভেঙে’ যাচ্ছে, ‘কালবোশেখির ঝড়ে’ ঘুড়ির কাগজ ছিঁড়ে যাচ্ছে এবং ‘আমি হু হু করে’ যথারীতি সেই ‘মরণের অতলেতে’- পেসিমিজম এর ছটায় কবিতা একেবারে চকচক (নাকি ম্যাটম্যাট?) করছে।

god kicks a man cartoon

যদিও আমার নিজেরই লেখা তবুও ওই ‘হু হু করে তাই পড়ে যাই হায়’ এর জায়গাটা পড়লেই আমার কেন জানিনা মিলটনের ‘প্যারাডাইস লস্ট, বুক ওয়ান’ এর ‘ফল অব দি রেবেল এঞ্জেলস’ এর ঘটনাটা মনে পড়ে যাচ্ছে যেখানে সেটান, বেলজিবাব ও তাদের সাঙ্গপাঙ্গরা ন দিন ধরে স্বর্গ থেকে নরকে পড়েছিল ও ন দিন সেখানে পড়েছিল।

‘Nine times the space that measures Day and Night
To mortal men, he with his horrid crew
Lay vanquisht.’

নাঃ, পোস্টের সাইজ বাড়াতে বাড়াতে এখন মনে হচ্ছে একটু বোধহয় বেশীই বাড়িয়ে ফেলেছি। ভারি তো একখানা কবিতা! তাই এবারে ইতি।

1 টি মন্তব্য: