ভূত প্রেত নিয়ে বরাবরই আমাদের মনে নানা রকমের প্রশ্ন ঘুরঘুর করে- তেনারা কোথায় থাকেন, কি খান, কি করেন? তেনারা কি সত্যিই আছেন নাকি আমাদের কল্পনার রূপমাত্র? যদি থাকেন, তেনারা কি দিয়ে তৈরী- সোডিয়াম নাইট্রোমিথাইল, নাকি অন্য কোনও কেমিকেল, নাকি পঞ্চভূত?- এসব প্রশ্নের ঠিকঠাক জবাব দিতে পারে এমন কাউকেই আমি চিনি না। কিন্তু যা আমি জানি তা হল-সেই
অতীত কাল থেকেই ভূতেরা আমাদের মনে ভয়, কৌতুহল ও কল্পনা সৃষ্টি করে আসছেন।
ভূত বলে সত্যিই কিছু আছে কি নেই এ নিয়ে জ্ঞানী-গুনীরা বহুদিন ধরেই নানান রকমের পরিক্ষা-নিরীক্ষা ও অভিযান করে আসছেন; এবং এ যাবত এ নিয়ে লেখালিখিও প্রচুর হয়ে গিয়েছে। তাই এ নিয়ে আমি আলাদা করে আর কিছু লিখতে বা বলতে চাই না। সারাটা পৃথিবী জুড়ে নানা দেশে এবং নানান সংস্কৃতিতে এত রকমের
ভূতপ্রেতের বিবরণ রয়েছে যে এদেরকে এক মলাটে আনবার প্রচেষ্টা এক অতীব দুঃসাধ্য কাজ হয়ে
যাবে এবং আমি সে দুঃসাহস দেখাতেও চাইনে। যদি কখনও কেউ এমন কর্ম করেও, আমার মনে হয় ব্যাপারখানা
এক ‘মহাভূতভারত’ এর চেয়ে কম কিছু হবে না। কিন্তু এ লেখায় আমার আলোচনার বিষয়
হল- বাংলার সাহিত্যিকদের কল্পনার ভূত।
বহুকাল ধরেই আমাদের দু বাংলার সাহিত্যিকদেরই ভূতেরা নিজেদের নিয়ে লেখার জন্য দুর্নিবারভাবে আকর্ষণ করে এসেছে, এবং এর ফলও যা হবার তাইই হয়েছে- আমাদের দু বাংলাতেই ভূতেদের নিয়ে অপূর্ব সব লেখা, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি সৃষ্টি হয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, লীলা মজুমদার, সত্যজিত রায়, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, ষষ্ঠীপদ চট্টপাধ্যায়, সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ, ত্রৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের মত লেখকদের লেখায় আমরা শুধু নানান স্বাদের ভুতের গল্পই পাইনি, নানা রকমের ভূতেদেরও পেয়েছি বটে।
এই সিরিজে
আমি বাংলা সাহিত্যে পাওয়া যায় এমন সব ভুতেদের বিষয়ে লিখব (আমি লিখে আপলোড করার সাথে সাথেই নামগুলিতে ক্লিক করলেই লেখাগুলি পড়তে পারবেন)। যেমন-
- ব্রহ্মদৈত্য
- ভূতের রাজা
- পেত্নী
- শাকচুন্নি
- কারিয়া পিরেত
- জিভ কাটা
- বেঁশো ভুত
- গেছো ভুত
- মেছো ভুত
- মামদো ভুত
- বেঘো ভুত
- আতশি ভুত
- শিকল বুড়ি অথবা জলপিশাচ
- ডামরী
- স্কন্ধকাটা
- পেঁচাপেঁচি
- কানাভুলো
- জিন
- ডাইনি
- বোবা
- নিশি
- রাক্ষশ
- খোক্কশ
- দৈত্য
- পিশাচ
- বেতাল
- গলায় দড়ে ভূত
- ঘ্যাঁঘো ভূত
- যক্ষ অথবা যক
- প্রাপ্তি
এই সিরিজের আসন্ন লেখাগুলিতে আমি এক এক করে এই সব ভূতেদের নিয়ে আলোচনা করব- তেনারা দেখতে কেমন, কি করেন, কোথায় থাকেন ইত্যাদি। এছাড়াও সেই ভূতের একটি কাল্পনিক ইন্টারভিউও থাকবে। আশা করি পাঠককুলের ভাল লাগবে। পরবর্তী লেখায় বাংলা সাহিত্যে ভূতেদের উৎপত্তি বিষয়ে পাওয়া যায় এমন কয়েকটি থিয়োরি সম্বন্ধে আলোচনা করা হবে। (লেখাটা পড়তে এখানে ক্লিক করুন)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন