বুধবার, ১২ মে, ২০২১

পিরেতেন্টারভিউ - কারিয়া পিরেত


এর আগের ভাগটি, মানে কারিয়া পিরেতকে নিয়ে মুল লেখাটি যদি আপনি এখনও পড়ে থাকেন তো নীচের লিংকে গিয়ে পড়ে নিতে পারেন-

কা রি য়া  পি রে ত


[প্রত্যেকবার এই বিভাগে আপনারা একটি কাল্পনিক ইন্টারভিউ পেয়ে থাকেন কিঞ্চিত অসুবিধের কারণে এবারের ইন্টারভিউটিকারিয়া পিরেতলেখাটির সাথে দেওয়া হয়নি আজকের ইন্টারভিউ করা হয়েছে কারিয়া পিরেতের যদিও সাধারণত ভূতেরা নাকি নাঁকি সুঁরে কঁথা বঁলে থাঁকেঁন, কিন্তু টাইপিং এর সুবিধার্থে চন্দ্রবিন্দুগুলি বাদ দেওয়া হল, দয়া করে কল্পনা করে নেবেন]


( মামাবাড়ি থেকে কাজ সেরে ফিরতে ফিরতে বেশ খানিকটা দেরি হয়ে গিয়েছিল সেদিন, একা একা বাড়ি ফেরার সময় মাঝপথে হঠাৎ )


                ঋতম (স্বগতোক্তি) মামাবাড়ি গিয়ে আসতে আসতে যে দেখি রাত হয়ে গেল নাঃ, হাঁপিয়ে গিয়েছি, এই তালগাছটার তলায় একটু জিরিয়ে নিই আরে, কি যেন শোনা যাচ্ছে না!


কারিয়া পিরেত (তালগাছের ওপর থেকে গান গায়

                 আরে চা রা রা রা রা রা রা রা 

                 আরে ভজুয়াকে বহিনিয়া, ভগলুকে বিটিয়া

                 কেকরাসে সাদিয়া হো, কেকরাসে হোওওওও-


                 ঋতম - (স্বগতোক্তি) ওরে বাবা এটা আবার কে রে তালগাছে? এ যে দেখি কালো একটা জীবাত্মা সড়সড় করে গাছ বেয়ে উঠছে আর নামছে

                  ঋতম - তালগাছে ওটা কে গো তুমি?


কারিয়া পিরেত কারিয়া পিরেত বা!


                ঋতম - কারিয়া পিরেত বা…, মানে তুমিথুড়ি, আপনি সেই বিখ্যাত ভূত কারিয়া পিরেত নাকি? ঠিক-ঠিক, অবিশ্যি তালগাছে উঠতে নামতে দেখে আমারই আগে বুঝে যাওয়া উচিত ছিল

                ঋতম - (স্বগতোক্তি) একজন ফেমাস ভূতকে যখন পাওয়া গিয়েছে, ফাঁকতালে আমার পেজ এর জন্য এর একটা ইন্টারভিউ নিয়ে নিলে কেমন হয়?

                ঋতম - ইয়ে, কারিয়া দাদা, আপনার সাথে একটা কথা ছিল


কারিয়া পিরেত - বোলো, বোলো বোলিয়ে ফেলো


                ঋতম মানে, আমার না একটা ব্লগ আছে তার জন্যে আপনি যদি একটা ইন্টারভিউ দেন…, মানে আপনি তো খুব বিখ্যাততাই আরকি বলছিলাম


কারিয়া পিরেতকৌন টারভিউ? উ কা হোত হ্যায়?


                ঋতমইন্টারভিউ, মানে আমি কিছু প্রশ্ন করব, আপনি তার উত্তর দেবেন আমি সেগুলো লিখে নিয়ে আমার ব্লগে দিয়ে দেবো, কিছু লোকে পড়বে আর বাঃ বাঃ করবেএই আরকি


কারিয়া পিরেতআচ্ছাঅ্যাইসা কেয়া? ঠিক বা, দাঁড়াও, হামি নিচে নামিয়ে তুমার পাসে আসি, তনিক খৈনী বনাই, উসকে বাদ তুমার সওয়ালগুলার জওয়াব দেওয়া যাবে


( কারিয়া সড়সড় করে এসে আমার পাশে বসে )


কারিয়া পিরেততা বাবুয়া তুমি থোড়া খৈনী লিবে? একদম বড়িয়া জিনিষ আছে


                ঋতম (স্বগতোক্তি) কি জানি বাবা, তুষ্ট রাখাই শ্রেয়, নইলে যদি ঘাড়খানা মটকে দেয়! আফ্টার অল ভূত তো!

                ঋতম দিন দেখি, আজ নাহয় ভৌতিক খৈনিই খেয়ে দেখি!


( দুই চাপড় মেরে কারিয়া খৈনী দেয় খৈনী আদান প্রদানের পর শুরু হয় ইন্টারভিউ )

কারিয়া পিরেত


                ঋতমআপনি কিভাবে পিরেত বা প্রেত হলেন?


কারিয়া পিরেত আরে ইতনা সব হামি এখোন বোলতে পারব না উ রাজসেখর বাসু লেখক আছে ন, উয়ো ভুসান্ডির মাঠে বলে একঠো কাহানিতে হামার কোথা লিখে রাখছে, পড় লেও দুসরা কুছু পুছো


                ঋতমআচ্ছা আচ্ছা, ঠিক আছে আমার পরবর্তী প্রশ্ন হল, ভূত হয়ে আপনার কেমন লাগছে?


কারিয়া পিরেতআরে বাবু ভূত হোয়ে কারিয়া কো লাগছে একদম বড়িয়া কৌনো ডর নাই, কৌনো বেপারে কৌনো হড়বড় নাই, হোই না একদম বিমার, কৌনো বেপারে সরদর্দ নাই হমার আরে বাবু কোতো সুবিধা পেয়েছি জানো?


                ঋতমযেমন?


কারিয়া পিরেত – আরে বাবু জেমন এই যে তোমরা সারাদিন ভগওয়ান ভগওয়ান করো, কখুনো দেখেছো তাকে? জিন্দা জোখোন ছিলম হামিও দেখি নাই। কিন্তু এখোন ইচ্ছা হোলেই হামি ভগওয়ানের সাথে দেখা কোরে আসতে পারি, বুঝলে?


                ঋতমভগবানের দেখা? আপনি ভগবানকে ভয় পান না?


কারিয়া পিরেত – ভোয় কেনো পাবো ববুয়া? হামি কি কৌনো গলতি কোরেছি যে ভগওয়ানকে ডরাতে যাবো? এই তো কুছ দিন পহলে হামার কুছু কাজ ছিলো তো ভগওয়ানের কাছে গেস্‌লম। কাহে ডরাউঁ ভাই?


                ঋতম – না মানে ভূত ভগবান এক জায়গায়… ব্যাপারটা কেমন শোনায় না? ছোট থেকে শুনে এসেছি যে ভূতে ধরলে, ক্ষতি করলে ভগবান বাঁচাবে; ভূত ভগবানকে ভয় পায়… তাই।


কারিয়া পিরেত – হাঃ-হাঃ-হাঃ-হাঃ-হাঃ… আচ্ছা, সোনো ছোকরা, রাজনীতি করো না তোমরা, রাজনীতি? এইটাও হামাদের একরকম কূটনীতি আছে। উয়ো সব তুমরা যা জানো সব গলত আছে। হামরা কারও ঘাড় মটকাইনা, কারও কোনও ক্ষতিও কোরিনা, আর ভগওয়ানের সাথে হামাদের খুব দোস্তি আছে। ভূত জিওয়ান আসোলে খুব সুখের আছে।


                ঋতমকিন্তু তাহলে আমরা অমনধারা জানি কেন?


কারিয়া পিরেত – তুমাদের মাঝে অমন জানানো হয় যাতে তুমাদের মনে ভূত হোবার লোভ না জাগে। সুনো, মানুষ জিওয়ানে ওনেক দুঃখ-কষ্ট ঝেলতে হোয়; তাই মানুষ যদি জেনে যায় যে ভূত হোতে পারলেই সুখই-সুখ, তোমরা তো সব টপাটপ মরতে চাইবে, পর উয়ো তো সহি নহি! তাই ভগওয়ান ওরোকোম কৌনসেপ্ট তুমাদের মনে দিয়ে দিয়েছে। ইসে ভি একরোকোম কূটনীতি হি বোলতে  পারো।


                ঋতম তবে মাঝে মাঝে যে শুনি ভূতে একে ভয় দেখাল, ওকে ভয় দেখাল…সেগুলো?


কারিয়া পিরেত – সে তো আমরা মাঝে মাঝে ঝুঠমুঠ কা ডর দেখাই কৌনো কৌনো লোককে যাতে তোমাদের বিসওয়াসঠো থাকে, বুঝলে?


                ঋতম হুম্‌…।


কারিয়া পিরেত – চলো বাবু, বহুত বক্‌বক্‌ কর লিয়া। তুম ভি ঘর যাও, হামিও এখুন যাই।


( কারিয়া পিরেত অদৃশ্য হয়, আমি মাথা চুলকোতে চুলকোতে বাড়ি ফিরে আসি )




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন